আগৈলঝাড়া প্রতিবেদক ॥ আগৈলঝাড়া উপজেলার এক কিশোরীকে (১৫) অপহরণের পর পিরোজপুরের নাজিরপুরে তিন মাস আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় সহায়তার অভিযোগে আকলিমা বেগম নামে এক নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৯ জুন) দুপুর ১২টার দিকে তাকে আগৌলঝাড়া থেকে বরিশাল আদালতে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ওই কিশোরীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার আকলিমা বেগম পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা গ্রামের সাহেদ শেখের স্ত্রী। তার বাবার বাড়ি আগৈলঝাড়া উপজেলার রতœপুর গ্রামে। নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরীর বাড়ি আকলিমা বেগমের বাবার বাড়ির পাশে। আকলিমা ওই কিশোরীর দূর সম্পর্কের ফুফু। আগৈলঝাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন জানান, ওই কিশোরী তার মা মারা যাওয়ার পর ছোট বোনকে নিয়ে দাদার বাড়ি উপজেলার রতœপুর গ্রামে থাকতো। তার বাবা ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। দাদা-দাদি মারা যাওয়ার পর তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। ওই কিশোরী ও তার ছোট বোনকে দূর সম্পর্কের ফুফু আকলিমা বেগমকে দেখা শোনার জন্য বলেন। আকলিমার স্বামীর বাড়ি পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা গ্রামে হলেও বর্তমানে তিনি আগৌলঝাড়া উপজেলার রতœপুর গ্রামে থাকতেন। মামলার বরাত দিয়ে ওসি জানান, আকলিমার ভাসুর নাজিরপুরের মাটিভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সহিদ শেখ ওরফে সুমন (৪০) বিভিন্ন সময় আগৌলঝাড়া উপজেলার রতœপুর গ্রামে আসতেন। সেই সুবাদে ওই কিশোরীর সঙ্গে সহিদ শেখের পরিচয় ছিল। গত ১৬ মার্চ সন্ধ্যায় সহিদ শেখ মোবাইল ফোনে ওই কিশোরীকে বাড়ির পাশের রাস্তায় তার সঙ্গে দেখা করতে বলেন। ওই কিশোরী সহিদ শেখের সঙ্গে দেখা করতে যায়। সেখানে আগে থেকে নাজিরপুরের মাহমুদকান্দি গ্রামের সরোয়ার ফরাজীর ছেলে রেজাউল ফরাজী, ফুফু আকলিমা বেগমসহ অজ্ঞাতনামা ২-৩ জন অবস্থান করছিলেন। এরপর সহিদ শেখ তাদের সহযোগিতায় ওই কিশোরীকে অপহরণ করে মোটরসাইকেলে করে নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা গ্রামে নিয়ে যান। সেখানে সুমন তার বাড়িতে নিয়ে ওই কিশোরীকে তিন মাস আটকে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। গত ১০ জুন কৌশলে ওই কিশোরী সেখান থেকে পালিয়ে বাড়িতে চলে আসে। এরপর গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) আগৌলঝাড়া থানায় গিয়ে ঘটনার অভিযোগ দেয়। অভিযোগটি এজাহারভুক্ত করে পুলিশ। এতে সহিদ শেখ ওরফে সুমনকে প্রধান আসামি করা হয়। সহায়তাকরী হিসেবে দূর সম্পর্কের ফুফু আকলিমা বেগমসহ আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। ওসি মো. আফজাল হোসেন বলেন, মামালা দায়েরের পর বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষণে সহায়তাকারী আকলিমা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ওই কিশোরীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি সহিদ শেখ ওরফে সুমনসহ বাকি তিনজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply